বহিরাগত মুক্ত বাংলা গড়ার দাবিতে বাংলা পক্ষের মিছিল - Voter List Purification: Safeguarding Democracy or Political Controversy ?

 বহিরাগত মুক্ত বাংলা গড়ার দাবিতে বাংলা পক্ষের মিছিল

কলকাতা, 08-03-2025: বহিরাগত ও ভুয়ো ভোটারদের বাংলা থেকে বিতাড়নের দাবিতে আজ কলকাতার রাস্তায় মহামিছিল করল বাংলা পক্ষ। এক্সাইড মোড় থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত এই মিছিলে কয়েক হাজার বাঙালি অংশ নেন। মিছিলের স্লোগান ছিল, “দুই রাজ্যে ভোট যাদের, বাংলা থেকে তাড়াও তাদের।”

বাংলা পক্ষের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, শীর্ষ পরিষদ সদস্য অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়, ডা: আব্দুল লতিফ, মনন মন্ডল, মহ: সাহীন, সৌম্যকান্তি ঘোড়ই সহ বিভিন্ন জেলার সম্পাদকরা।


বাংলা পক্ষের অবস্থান

গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাংলার ভোটার লিস্টকে শুদ্ধ করতে হবে। বাংলা পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে যে দাবি তুলেছে, আজ তা মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সহ অনেকে মেনে নিচ্ছেন। যাদের দুটি রাজ্যে ভোটার কার্ড রয়েছে, তাদের বাংলা ছাড়া করতে হবে। কারণ তারা ক্রিমিনাল। আমরা বাংলায় রাইরের রাজ্য বা রোহিঙ্গা ক্রিমিনাল চাই না। সরকার, প্রশাসন ও সাধারণ বাঙালিদের একযোগে কাজ করতে হবে।”


রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ

বাংলা পক্ষের এই দাবির বাস্তবায়ন রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত জটিল ও স্পর্শকাতর। বিশ্লেষকদের মতে, এই আন্দোলন একদিকে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে উজ্জীবিত করতে পারে, অন্যদিকে এর বাস্তবায়ন কঠিন হবে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন আইনগত জটিলতা এবং ভোট ব্যালান্সের হিসাব-নিকাশের কারণে।


রাজনৈতিক মহলে ধারণা, বাংলা পক্ষের এই আন্দোলন আসন্ন নির্বাচনেও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠতে পারে। আজকের মিছিল বহিরাগত ও ভুয়ো ভোটার ইস্যুকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে। তবে একই দেশের নাগরিকদের রাজ্য থেকে বিতাড়নের প্রশ্নটি সাংবিধানিক ও রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল। প্রশাসনের পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া কী হয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।



Editor,
Jayant Das

সম্পাদকীয়

ভোটার লিস্ট শুদ্ধিকরণ: গণতন্ত্রের সুরক্ষা না রাজনৈতিক বিতর্ক?

বাংলা পক্ষের সাম্প্রতিক মহামিছিল বাংলার রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবল আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বহিরাগত ও ভুয়ো ভোটারদের বাংলা থেকে বিতাড়নের দাবিটি আবেগনির্ভর হলেও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল ও সংবেদনশীল।

একদিকে বাংলা পক্ষের দাবি বাঙালির অধিকার রক্ষার প্রশ্ন তুলেছে, যা অনস্বীকার্য। ভোটার লিস্টে ভুয়ো বা বহিরাগতদের অন্তর্ভুক্তি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। রাজ্যের উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং সামাজিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে বহিরাগত অপরাধীদের সম্ভাব্য প্রভাব অবশ্যই ভাবনার বিষয়।

তবে এই ইস্যুকে শুধুমাত্র জাতিগত বা আঞ্চলিকতার নিরিখে বিচার করা একপেশে হবে। একই দেশের নাগরিকদের রাজ্য থেকে বিতাড়নের প্রশ্ন সাংবিধানিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি বহন করে। প্রকৃত দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়াটি কঠোর আইনানুগ ও সুবিবেচনাপ্রসূত হওয়া জরুরি।

বাংলা পক্ষের এই আন্দোলন বাঙালি জাতীয়তাবাদকে উজ্জীবিত করার পাশাপাশি রাজনৈতিক মেরুকরণকেও বাড়িয়ে তুলতে পারে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগ ছাড়া এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।

ভোটার লিস্ট শুদ্ধিকরণের দাবিটি গণতন্ত্রের সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা যেন জাতিগত বিদ্বেষ বা রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অস্ত্র না হয়ে ওঠে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।














একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ